টবে বারোমাসি শিউলি ফুল গাছের যত্ন

Last updated on October 14th, 2023 at 02:11 pm

শরৎকালকে বলা হয় শুভ্রতার প্রতীক। এই শরৎকালের আমরা শিউলি ফুল দেখতে পায়। তবে শরৎকাল ছাড়াও বারোমাস কমবেশী এই ফুল দেখা যারা, অবাধ সূর্যালোক পায় এমন উঁচু অথবা ঢালু পলি- দোঁয়াশ মাটি শিউলি ফুলের চাষের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। যথাসময়ে সারপ্রয়োগ, জলসেচন ও ডাল কাঁটাই-ছাঁটাই এর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখলে কমবেশি বারোমাসি গাছ থেকে শিউলি ফুল পাওয়া যায়।

আজকের প্রতিবেদন থেকে আপনারা টবে শিউলি ফুল গাছ প্রতিস্থাপন প্রদ্ধতি এবং যত্ন সম্পর্কে জানতে পারবেন। শিউলির বৈজ্ঞানিক নাম Nyctanthes arbor-tristis (নিস্তানথেস বড়-ত্রিশটিস), এটি Oleaceae পরিবারের অর্ন্তভুক্ত , ইংরেজি নাম -Night-Flowering Jasmine, Coral Jasmine বা Nyctanthes Arbor-tristis-Parijat, Jasmim Of The Night, Tree Of Sadness, Parijat, Tree of Sorrow। শিউলি গাছ বহুবর্ষজীবী এবং পর্ণমোচী প্রকৃতির উদ্ভিদ। শিউলি গাছের আদি বাসস্থান দক্ষিণ এশিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, ভারত এবং থাইল্যান্ড সহ পাশ্ববর্তী দেশ।

টবে বারোমাসি শিউলি ফুল গাছের যত্ন

শিউলি ফুলের পাপড়ি হতে সুগন্ধি তৈল নিষ্কাশন করে বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া নানা রোগ সারাতে এই গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়। অবাধ সূর্যালোক পায় এমন উঁচু পলি- দোঁয়াশ মাটি শিউলি ফুলের চাষের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। যথাসময়ে সারপ্রয়োগ, জলসেচন ও ডাল ছাঁটাই -এর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখলে কমবেশি বারোমাসি শিউলি ফুল পাওয়া যায়।

শিউলির চাষ শুধু সুগন্ধি ফুলের জন্যই না, এর বাজার চাহিদাও আছে। সুমিষ্ট গন্ধের জন্য এই জাতীয় ফুলের কদর বেশি। এর ফুলগুলি হতে এক ধরনের হলুদ রঞ্জক পদার্থ বার করা হয় যা থেকে প্রসাধনী সামগ্রী তৈরী করা হয়ে থাকে। শিউলি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, তাই সহজে বাগান করার জন্য ছাদ বা বারান্দায় এই গাছটিকে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে, তবে তার জন্য প্রয়োজন সময় মতো পরিচর্যা এবং ধৈর্য। ঠিকঠাক যত্ন নিলে গাছ লাগানোর এক-দেড় বছর পরে ফুল আসতে শুরু করে, তবে তা পরিমাণে অল্প। তিন-চার বছর পরে গাছ ফুলে পরিপূর্ণ হয়। শিউলি ফুল অগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় এবং প্রায় জানুয়ারি অবধি ফোটে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত অধিক ফুল ফোঁটে। বারোমাসি শিউলি গাছে তো সারা বছরই ফুল হয়! শরৎ এর শিউলি বা বারমাসি শিউলির প্রতিস্থাপন ও পরিচর্যা প্রায় একই রকমের তবুও বারোমাসি শিউলি সারাবছরই ফুল দেয়, তাই তার জন্য একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। এই প্রজাতির শিউলি গাছের আকার একটু ছোট্ট এবং ঝোপালো প্রকৃতির হয়।

চারা গাছ সংগ্রহ:

চারা গাছ সংগ্রহের সময়ে গুরুত্ব দিতে হবে সুস্থ সবল চারা নির্বাচনের জন্য। গাছটি যেন বেশ হৃষ্টপুষ্ট ও সতেজ হয়, রোগক্রান্ত হলে সেই চারা সংগ্রহ করবেন না। নার্সারি থেকে চারা নির্বাচন করবার সময়ে দেখে নেবেন, সেটি যেন এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা বিশিষ্ঠ হয় এবং পলিথিনের ছিদ্র দিয়ে শিকড় দেখা যাচ্ছে কি না। শিকড় দেখা গেলে সেই চারা সংগ্রহ করবেন।

শিউলি গাছ টবে প্রতিস্থাপনের পর কাটাই-ছাঁটাই করে সঠিক শেপ দিয়ে ঝাঁকড়া করে ফুল পেতে এক-দেড় বছর সময় লেগে যায়। যাই হোক, গাছ এনে বাড়ির আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে দিন-সাতেক সময় দেবেন, তারপর টবে চারাগাছ প্রতিস্থাপন করবেন।

স্থান নির্বাচন:-

অবাধ সূর্যালোক সহ উঁচু অথবা ঢালু পলি- দোঁয়াশ মাটি শিউলি গাছের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। এই গাছ রৌদ্র ভীষণ ভালবাসে তাই দিনে ৬ থেকে ৮ ঘটা সূর্যের আলো পাই তেমন স্থানে গাছটিকে প্রতিস্থাপন করা উচিত, এতে গাছের বাড়বাড়ন্ত ভালো হয় এবং রোগে আক্রান্ত কম হয়।

টবে প্রতিস্থাপনের জন্য মাটি প্রস্তুত:-

শিউলি ভারী এবং হালকা দু ধরনেরই মাটি পছন্দ করে, মাটি হালকা আদ্রতা বিশিষ্ট ভেজা ভাব এই গাছের জন্য উত্তম, কিন্তু গাছের গোড়ায় জল জমা একদম পছন্দ করে না। আপনার শিউলি গাছ কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে মাটি তৈরীর উপর। মাটি প্রস্তুতের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ দোঁয়াশ মাটি (পুকুর অথবা নদীর পলি পেলে খুবই ভাল), সাথে ৪০ শতাংশ এক বছরের পুরনো গোবর সার বা ভার্মি কম্পোস্ট বা পাতাপচা সার এবং বাকি ১০ শতাংশ কোকোপিট একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে। এর সঙ্গে প্রতি টবের হিসেবে হাঁফ মুঠো নিমখোল, হাঁফ মুঠো হাড়গুঁড়ো, হাঁফ মুঠো শিং কুঁচি, “নিমখোল না পেলে একটি টব হিসাবে দেড় চা-চামচ সাফ ফাঙ্গিসাইড মেশাতে পারেন “, উপাদান গুলিকে ভালো করে মিশিয়ে নিলেই শিউলি গাছের জন্য আদর্শ মাটি প্রস্তুত হয়ে যাবে। এই মাটি আপনি নতুন চারা বসানোর জন্য অথবা রিপটিং-এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

শিউলি গাছের জন্য টব নির্বাচন:

শিউলি গাছের শিকড় দ্রুত বাড়ে। নার্সারি থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসা কলমের গাছ প্রথমে চার অথবা ছ’ ইঞ্চির টবে বসাতে পারেন। তার পর গাছের বাড়বাড়ন্ত দেখে আট ইঞ্চির টবে স্থান্তরিত করতে হবে। গাছের গোড়া শক্ত হলে এবং ভালমতো ফুল হওয়া শুরু হলে ১২ ইঞ্চির টবে গাছটিকে স্থানান্তরিত করলে গাছ বহুদিন বেঁচে থাকবে। মনে রাখবেন, দেড় বছরে একবার শিকড়ও ছাঁটা দরকার। শিকড় যখন গোড়ার কাছে উঁকি দেবে তখন বুঝবেন, এ বার শিকড় এবং ডাল ছাঁটাইয়ের পালা। তাই গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে খেয়াল করে টব এবং টবের মাটি পরিবর্তন জরুরি।

প্রতিস্থাপন পদ্ধতি :-

➧ টবের ছিদ্র গুলোকে প্রথমে টব ভাঙা টুকরো / ইটের টুকরো দিয়ে আটকে দিতে হবে।
➧ ছিদ্র গুলোকে আটকে দেওয়ার পর কিছু পরিমান বালি-নুড়ি টবের মধ্যে বিছিয়ে দিয়ে এক ইঞ্চি বেড তৈরি করতে হবে যাতে অতিরিক্ত জল ড্রেনেজ সিস্টেম থেকে টবের বাইরে বেরিয়ে যাবে।
➧টবের ড্রেনেজ সিস্টেম করার পর কিছু পরিমান মাটি টবের মধ্য দিয়ে একটি লেয়ার তৈরী করে দিতে হবে, তা হলে মাটির মধ‍্যে থাকা বাতাস বেরিয়ে যাবে ফলে গাছের শিকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
➧ এর পর টবে অল্প করে মাটি দিয়ে গাছটা টবের ঠিক মাঝখানে বসিয়ে দিতে হবে।
➧তারপর যতটা মাটি প্রয়োজন ততটা মাটি টবে চেপে চেপে দিতে হবে।

টবে মাটি দেওয়ার সময় অবশ‍্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে টবের ওপর 2 ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা থাকে।

গাছের বিশেষ পরিচর্যা :-

বারমাসি শিউলি গাছের পরিচর্যার বিষয়ে যাওয়ার আগে এই গাছের Flower Season সম্পর্কে জানতে হবে তা নাহলে গাছের সঠিক পরিচর্যা করতে পারবেন না। শিউলি গাছের Flower Season নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময় অব্ধি (শরৎ এর শুরু থেকে বসন্তকাল), তাই বর্ষার মরসুমের শুরু থেকে গাছের যত্ন এবং পরিচর্যা শুরু করে দিতে হবে। চেষ্টা করবেন টবের গাছগুলিকে সম্পূর্ণ সূর্যের আলোতে রাখবার তবে গরমকালে টবের গাছগুলিকে দুপুরের তীব্র রোদ থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন, তা নাহলে তীব্র রোদে গাছ রাখতে পাতার কিনারা গুলি হলুদ হয়ে বা পুঁড়ে যাবে। চেষ্টা করবেন গাছগুলি সকালের সূর্যের আলো পায় এবং বিকালে সূর্যের আলো পায় এমন স্থানে রাখবার। গরমকালে টবের গাছে দিন দু বেলা জল দেওয়া খুবই প্রায়াজন ,তবে শীতকালে এই গাছে খুব বেশি জলের প্রায়াজন হয না।

[আরও পড়ুন: গাছ ভর্তি প্রচুর ফুল পেতে নাগচম্পা গাছের যত্ন]

শিউলি গাছে জল প্রয়োগ:

বর্ষাকালে এই গাছে বেশি জল দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বৃষ্টির কিছুদিন পর পর টবের মাটি এক থেকে দেড় ইঞ্চি খুঁড়ে ছত্রাকনাশক ছিঁটিয়ে দেবেন ও গাছটিকে রৌদ্রে রেখে দেবেন এবং আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। শিউলি গাছ টবে করলে খেয়াল রাখতে হবে গ্রীষ্মকালে যেন নিয়মিত জল দেওয়া হয়। শিউলি গাছে মাকড় এবং পত্রভুক পোকার উপদ্রব বেশী দেখা যায়। এই কীট-পতঙ্গ দমনের জন্য কেলথেন ১৮ ই. সি.-র। বর্ষাকালের টবের গাছগুলোতে ১০ থেকে ১২ দিন অন্তর অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।

মনে রাখবেন, টবে জলের অভাব হলে, কুঁড়ি ছোট হয়ে যাওয়া অথবা কুঁড়ি শুকাইয়া নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

ওভারওয়াটারিং:

গরমের মরসুম ব্যাতিত বর্ষা এবং শীতে শিউলি গাছে বেশি জল প্রয়োগ করবেন না, করলে রোগের লক্ষণ প্রকপ হয়, কারণ শিউলি গাছ মাঝারি আর্দ্রতাযুক্ত মাটি পছন্দ করে। অত্যধিক জল দেওয়ার কারণে পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া, শিকড় পচা, পাতা ঝরা প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে…

পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া:
যখন গাছপালা খুব বেশি জল পায়, তখন শিকড় অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হয় এবং গাছের নীচের পাতাগুলি ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে যায়।

শিকড় পচা:
মাটিতে অতিরিক্ত জল দেওয়ার ফলে ক্ষতিকারক ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত হতে পারে, যার ফলে শিকড় পচে যায় এবং অবশেষে গাছটি মারা যেতে পারে।

পাতা ঝরা:
যখন গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত জল জমে থাকে, তখন কোষে চাপের প্রতিক্রিয়ার ফলে পাতা ঝড়ে যেতে পারে, এমনকি পাতাগুলি সবুজ এবং স্বাস্থ্যকর দেখালেও।

বৃদ্ধি থমকে যাওয়া:
ওভারওয়াটারিং এর ফলে মাটি স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তৈরি করে যা মাটিতে ছাঁচ এবং চিড়ার বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করতে পারে।

বর্ধিত সংবেদনশীলতা রোগ:
অতিরিক্ত জল দেওয়ার ফলে গাছগুলি আরও বেশী সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে, ফলে গাছের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, তাদের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা দুর্বল করে।

সমাধান

  1. ঋতু এবং মাটি শুষ্কতার উপর ভিত্তি করে গাছে জল দিতে হবে। জল দেওয়ার আগে টবের মাটিতে হাত দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।
  2. প্রয়োজনে বর্ষাকালে টব গুলিকে সেডের নীচে রেখে দেবেন।
  3. বর্ষার সময়ে খোলা আকাশের নীচে গাছ থাকলে কোন ভাবে গাছে জল দেওয়া যাবে না, যতক্ষন না মাটি শুকিয়ে যায়। বর্ষার সময়ে গাছে কোন ধরনের নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার প্রয়োগ করবেন না, তা হলে গাছে পাতার সংক্ষা বৃদ্ধি পাবে এবং ফুলের সংক্ষা কমে যাবে।
  4. টবের ড্রেনেজ সিস্টেম সঠিক আছে, তা নিশ্চিৎ করতে হবে।
  5. ভাল বায়ুচলাচল এবং উষ্ণতার সাথে পরিবেশকে অপ্টিমাইজ করুন যাতে জল বাষ্পীভবন বাড়ানো যায় এবং অতিরিক্ত জল পড়া রোধ করা যায়।

আন্ডারওয়াটারিং:

ওভারওয়াটারিং এর ফলে গাছের যেমন ক্ষতি হয়, ঠিক একই ভাবে আন্ডারওয়াটারিং এর ফলে গাছের যেমন ক্ষতি হতে পারে। বর্ষা এবং শীতে শিউলি গাছে কম জলের প্রয়োজন হয় কিন্তু গ্রীষ্মকালে কম জল প্রয়োগের ফলে রোগের লক্ষণ প্রকপ হয়, কারণ শিউলি গাছ মাঝারি আর্দ্রতাযুক্ত মাটি পছন্দ করে। কম জল দেওয়ার কারণে পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া, কুঁড়ি ছোট হয়ে যাওয়া, পাতা ঝরা প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে…

সমাধান

  1. গাছের জন্য অভিন্ন এবং পর্যাপ্ত আর্দ্রতা নিশ্চিত করার জন্য ধীর রিং জল দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মাটি পরিপূর্ণ করুন।
  2. পাতার জলের বাষ্পীভবন ধীর করার জন্য জলের ট্রে বা মিস্টিং দিয়ে বাতাসের আর্দ্রতা বাড়ান৷
  3. প্রস্তাবিত ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী জল দেওয়া। ঋতু এবং মাটি শুষ্কতার উপর ভিত্তি করে জল দেওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি সামঞ্জস্য করুন।

সার প্রয়োগ:-

টবে চারাগাছ বসানোর ১ থেকে ২ মাসের মধ্য কোন রাসায়নিক সার ব্যাবহার করা যাবে না, কিছু মাস পর অল্প জৈব সার দিলে ভালো হয়। জৈব সারের মধ্য কলার খোসা, ডিমের খোসা, হাঁড়গুড়ো, শিংকুঁচি ,পাতাপচা সার প্রভৃতি ব্যাবহার করা যেতে পারে। গাছের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে ও কোষকে মজবুত করতে চারাগাছ বসানোর কিছু মাস পর (গাছ বড় হয়ে গেলে) থেকে খোল পঁচানো জল ও DAP/TSP এক সাথে মিশিয়ে গাছে ব্যাবহার করতে হবে ৫ লিটার জলে ১00 গ্রাম খোল ৪-৫ দিন পঁচাবেন ৪ দিনের দিন ওর মধ্য ১০ থেকে ২০টি DAP/TSP দানা মিশিয়ে দেবেন। পরের দিন ওই মিশ্রণ টা গুলিয়ে নিয়ে এক মগ টবের মাটিতে দেবেন, মাসে দুই বার। অথবা NPK 10:26:26 হাফ চামচ করে মাসে একবার দিতে হবে এতে গাছের ফুল ও হবে এবং গাছের কান্ড পাতার বিকাশ ও সমপরিমানে হবে আর পটাসিয়াম নাইট্রেট ( 13:00:45) হাফ চামচ পরের মাসে একবার এতে গাছের রোগবালাই থেকে নিজেকে বাঁচানোর ক্ষমতা বাড়বে তার দরুন কুঁড়ি ঝরা রোধ হবে।

প্রত্যেক দু মাস অন্তর এক চামচ অনুখাদ্য এক চামচ হাড়গুড়ো এক চামচ সিংকুচি এক মুঠো ভার্মি কম্পোস্ট দিতে হবে, এটি সর্বদা ব্যাবহার করতে হবে।

জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এর নিয়ম করে খাবার দিতে হবে। তবে গাছ ভর্তি শিউলি ফুল পেতে অবশ্যই একটু ভিন্ন রকম যত্ন নিতে হবে। প্রত্যেক বারো ইঞ্চি টবের জন্য “হাফ চামচ ডি এ পি বাংলাদেশের বন্ধুরা টি এস পি দু’চামচ ফসফেট আর একচামচ পটাশ” যদি দাও প্রতি মাসে নিয়ম করে অথবা জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তাহলে কিন্তু গাছটা ঝাঁকরা হবে আর প্রচুর প্রচুর ফুল হবে।

কীটনাশক প্রয়োগ ও পোকামাকড় দমন:-

শিউলি গাছে তেমন একটা পোকামাকড়ের আক্রমণ ঘটে না। তথাপি ১৫ দিন অন্তর নিম অয়েল (Neem Oil) জলের সাথে মিশিয়ে সন্ধাতে গাছে স্প্রে করবেন এবং পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেশি হলে রাসারনিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। ডাইমেথয়েড 30% কম্পোজিসনের রোগর/রোগরপ্লাস/টাফগর এক লিটার জলে তিরিশ ফোঁটা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে গাছ পনের বা কুড়িদিন অন্তর যদি স্প্রে করলে কোন পোকার আক্রমণ হবে না।

বর্ষাকালে প্রতি ১৫ দিন অন্তর যে কোন কোম্পানির ফাংগিসাইড জলের সাথে মিশিয়ে সমস্ত গাছে স্প্রে করতে হবে । এছাড়াও সমস্ত রকম রোগবালাই থেকে গাছকে রোগ মুক্ত রাখতে গাছের গোড়ায় শুকনো নিমপাতা অথবা নিম খোল দিলে অধিকাংশ কীটপতঙ্গ গাছ আক্রমণ করতে পারে না।

[আরও পড়ুন: ছাদ বাগানে সুগন্ধি দোলনচাঁপা ফুল গাছের পরিচর্যা প্রদ্ধতি]

আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *