Summer Flower: ৩০ টি গরমের ফুল গাছ

শীতকাল শেষ হওয়ার সাথে সাথে গ্রীষ্মের উষ্ণতা, রোদ এবং তাপপ্রবাহে একটি ঋতু শুরু হয়। গ্রীষ্মের ফুলের উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রং যে কারো মুখে হাসি আনতে পারে এবং তাদের সুবাস আমাদের মনকে উজ্জীবিত করতে পারে। গ্রীষ্মে শীতের মতোই ফুল ফোটে, তবে আজ আমি সেরা ৩০টি গরমের ফুল গাছ নিয়ে আলোচনা করব যা আপনার বাগানকে আরো সৌন্দর্য করে তুলবে।

এই ফুলের মধ্যে ক্রোসেন্ডা, এলামুন্ডা, অ্যাডেনিয়াম, অলকানন্দা, ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা, হিমচাপা, নীলঘন্টা, রঙ্গন, গন্ধরাজ, গোলাপী টগর (কপসিয়া ফ্রুটিকোসা), জারুল, হলুদ গন্ধ (গোল্ডেন গার্ডেনিয়া), কৃষ্ণচূড়া, জিনিয়া, করবি, সূর্যমুখী, গাঁদা, কসমস, গুলাচ, কামিনী, মাধবী লতা, মধু মালতী, কুন্দ, জুঁই ফুল, দোলনচাপা, নয়নতারা, দোপাটি, গোলাপ, বেলি প্রভৃতি। এই গ্রীষ্মকালীন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এই ফুলগুলির মধ্যে কয়েকটি সহজেই আপনার বাড়ির ছাদে বা টবে লাগানো যেতে পারে।

আজকাল অনেকেই ছাদের বাগানে ফুল চাষ করতে পছন্দ করেন। অনেক ভালো মানুষ ছাদে টবে ফুল চাষ করে। বাড়িতে উপযুক্ত জায়গার অভাবে অনেকেই ছাদের বাগানে ফুল চাষ করেন। এতে যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে, তেমনি বাড়ির পরিবেশও ভালো থাকে। টবে ফুল গাছ করবার অনেক সুবিধা রয়েছে, সেই সাথে আছে বিভিন্ন অসুবিধা, যেমন বছর বছর মাটি পরিবর্তন বা স্থায়ী গাছের মূল ছাঁটাই। অসুবিধা সত্ত্বেও, অনেকে আনন্দের সাথে টবে ফুল গাছ প্রতিস্থাপন করে থাকেন।

টবের জন্য উপযুক্ত গরমের ফুল গাছ:-
মৌসুমি ফুল সবসময় টবে জন্মাতে হবে। কিন্তু বহুবর্ষজীবী গাছ টবে না করাই ভালো। সঠিক রোদ পেলে ফুল চাষ খুব ভালো হয়। টবে ফুল লাগানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই করা উচিত।

গরমের ফুল গাছের জন্য মাটি প্রস্তুত:-
টবে গাছ প্রতিস্থাপনে ক্ষেত্রে অবশ্যই মাটি প্রস্তুত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।গরমের মরসুমের, গাছের স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করার জন্য মাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অধিকাংশ গাছ টবে করবার জন্য জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ ওয়েল ড্রেন মাটি প্রস্তুত করতে হবে। গরমের গাছ করবার জন্য কীভাবে মাটি প্রস্তুত করবেন তা নিচে উল্লেখ করা হল…


গরমের অধিকাংশ গাছ দোআঁশ মাটিতে সবথেকে ভালো হয় এ জন্য বাগানের দুভাগ উর্বর দোঁয়াশ মাটি , একভাগ গোবরসার ( কমপক্ষে ৬ মাসের পুরোনো ) অথবা ১ বছরের পুরোনো পাতা পাঁচা সার অথবা ভার্মি কম্পোস্ট নিতে হবে ,একমুঠো হাড়গুড়ো ,একমুঠো শিং কুচি ,এক চামচ নিমখাল,এক চামচ আবদাগোল্ড (টব প্রতি) একসাথে মিশিয়ে অল্প জল দিয়ে পনের দিনের জন্য পলিথিন দিয়ে ডেকে রাখতে হবে। ১৫ দিন পর পলিথিন থেকে বার করে ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে ব্যাবহার করতে হবে।

রোপণ প্রক্রিয়া:-
চারা গাছ রোপণের জন্য উপযুক্ত মাপের টব সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু একটি ছোট গাছের জন্য একটি বড় টবে কোন ক্ষতি নেই, কিন্তু একটি বড় গাছের জন্য ছোট টব অনুমোদিত নয়। প্রতিটি টবের জন্য দোআঁশ মাটির সাথে এক তৃতীয়াংশ জৈব সার বা পচা গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে।

Planting Process Step by Step
  • প্রথমে টবের ছিদ্র গুলোকে ইটের টুকরো/ টব ভাঙা টুকরো দিয়ে আটকে দিতে হবে।
  • ছিদ্র গুলোকে আটকে দেওয়ার পর কিছু বালি-নুড়ি টবের মধ্যে বিছিয়ে দিয়ে এক ইঞ্চি বেড তৈরি করতে হবে যাতে অতিরিক্ত জল ড্রেনেজ সিস্টেম থেকে টবের বাইরে বেরিয়ে যাবে।
  • টবের ড্রেনেজ সিস্টেম করার পর কিছু পরিমান মাটি টবের মধ্য দিয়ে একটি লেয়ার তৈরী করে দিতে হবে, তা হলে মাটির মধ‍্যে থাকা বাতাস বেরিয়ে যাবে ফলে গাছের শিকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
  • এর পর টবে অল্প করে মাটি দিয়ে গাছটা টবের ঠিক মাঝখানে বসিয়ে দিতে হবে।
  • তারপর যতটা মাটি প্রয়োজন ততটা মাটি টবে চেপে চেপে দিতে হবে। মাটি দেওয়ার সময় অবশ‍্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন টবের ওপর থেকে 2 ইঞ্চি ফাঁকা থাকে।

Summer Flower: ৩০ টি গরমের ফুল গাছ

Table of Contents

গরমের ফুল গাছ ক্রোসেন্ডা :-

ক্রোসেন্ডা(Crossandra infundibuliformis) একটি গরমের ফুল গাছ, এটি ফায়ারক্র্যাকার ফুল (firecracker flower) নামে পরিচিত, অবস্থানের উপর নির্ভর করে গাছটি বার্ষিক বা বহুবর্ষজীবী হিসাবে জন্মায়। ক্রোসেন্ডা ফুলগাছ টি উচ্চতায় প্রায় ১ থেকে দেড় মিটার (৫ ফুঁট) পর্যন্ত হতে পারে। ফুলগুলি কমলা রঙের এবং পাপড়ি গুলি অনেক স্তরে সাজানো থাকে। এটি তার উজ্জ্বল পুষ্প এবং মোমযুক্ত সবুজ পাতাগুলির জন্য বেশি জন প্রিয়।

Summer Flower: ৩০ টি গরমের ফুল গাছ
Crossandra

গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম Crossandra Infundibuliformis, এটি Acanthaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ, মাদাগাস্কার, আফ্রিকা, আরব, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে এই প্রজাতির গাছগুলি দেখতে পাওয়া যায়। গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং আর্দ্র আবহাওয়া এই গাছের জন্য অনুকূল, তবে বার্ষিক উদ্ভিদ হিসাবে উত্তর আমেরিকার বাগানে অন্যান্য সূর্য-প্রেমী উদ্ভিদের সাথে মিশ্রিত করা যেতে পারে। Crossandra বসন্তের মাঝামাঝি সময় থেকে ফুল ফোঁটা শুরু হয়। প্রজাপতি এবং মৌমাছিদের আকৃষ্ট করতে এটিকে আপনার পরাগায়নকারী বাগানে অন্তর্ভুক্ত করুন, যেখানে এটি সারা গ্রীষ্মে অবিরাম ফুল ফোটে।

গরমের ফুল গাছ এলামুন্ডা :-

এলামুন্ডাকে হলুদ ট্রাম্পেট, গোল্ডেন ট্রাম্পেট বা Yellow Bell ও বলা হয়। এর আকর্ষণীয় সুন্দর ফুল বছরে একবার বাগানকে আলোকিত করে। গরমের মরসুম থেকে শীতের আগে পর্যন্ত অল্প যত্ন নিলেই এই গাছ থেকে ফুল পাওয়া যায়। এলামুন্ডার বিজ্ঞানসম্মত নাম Allamanda Cathartica, এটি Apocynaceae পারিবারের অন্তর্গত, আদি নিবাস ব্রাজিল। পৃথিবীতে অনেক ধরণের এলামুন্ডার প্রজাতি রয়েছে।

Summer Flower: ৩০ টি গরমের ফুল গাছ
Allamanda

এলামুন্ডা গাছটি আধা-আরোহণকারী উদ্ভিদ। বর্তমানে সোজাভাবে বেড়ে ওঠা গাছগুলি আজকাল বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে আল্লামান্ডা ক্যাথারটিকা উদ্ভিদ। এগুলি ছাঁটাইয়ের সাথে চিরহরিৎ গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদে পরিণত হতে পারে।

গরমের ফুল গাছ অ্যাডেনিয়াম:-

অ্যাডেনিয়াম দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার সাহারা, সুদান এবং সেনেগাল মরুভূমি অঞ্চলের স্থানীয় উদ্ভিদ। অ্যাডেনিয়াম ফুলের অনেক প্রজাতি রয়েছে, যা মরুভূমির গোলাপ নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ জল ছাড়াও পাত্রে দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। একটি নির্দিষ্ট পাত্রে দশ থেকে বিশ বছর রেখে দিলে স্বাভাবিকভাবেই তা বনসাই উদ্ভিদে পরিণত হয়।

Adenium

এডেনিয়াম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Adenium obesum, ইংরেজি নাম -Desert rose (ডেজার্ট রোজ), এটি Apocynaceae (এপোক্যানাসেই) পরিবারের একটি গুল্ম জাতীয়, পর্ণমোচী, বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। বাংলায় বলা হয় মরু গোলাপ।

গরমের ফুল গাছ ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা:-

আপনি যদি এমন একটি গাছ খুঁজছেন যার সৌন্দর্য এবং সুবাস উভয়ই আছে, তাহলে ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা ছাড়া আর কোন গাছ খুজবেন না। এটি সাউদার্ন ম্যাগনোলিয়া এবং দক্ষিণ ম্যাগনোলিয়া নামেও পরিচিত, গাছটি বৃক্ষ জাতীয়, সুগন্ধি ফুল এবং চকচকে সবুজ পাতার জন্য জনপ্রিয়, এটিকে ল্যান্ডস্কেপিংয়ের জন্য একটি জনপ্রিয় পছন্দ করে তোলে।

Magnolia grandiflora

ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম, এটি ম্যাগ্নলিয়াসেই (Magnoliaceae) পরিবারের, Magnolia গণের একটি সপুষ্পক, বৃক্ষ জাতীয়, চিরহরিৎ, বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। বাংলায় বলা হয় উদয়পদ্ম বা হিমচাঁপা।ইংরেজি নাম -Southern Magnolia, Bull Bay, Big Laure প্রভৃতি।

গরমের ফুল গাছ রঙ্গন:-

Ixora যা বাংলাতে বলা হয় রঙ্গন, এটি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয়, বহুবর্ষজীবী, কাষ্টল, চিরসবুজ এবং ঝোঁপের ন্যায়। উদ্ভিদটি প্রায়শই নাতিশীতোষ্ণ এবং শীতল জলবায়ুতে বার্ষিক হিসাবে জন্মায়। বড় ফুলের গুচ্ছগুলি লাল, কমলা, হলুদ, সাদা এবং গোলাপী রঙে আসে এবং এটি অন্য স্থানে জঙ্গল শিখা এবং কাঠের শিখা নামেও পরিচিত।

Ixora

রঙ্গন গাছের ফুলগুলি সাধারণত 20-25 দিনের জন্য সতেজ থাকে। একটি গুচ্ছে 20 থেকে 50টি ফুল থাকে যা নলাকার আকৃতির হয়। ফুলটির চারটি পাপড়ি রয়েছে, অনেকটা তারার মতো, তবে এটি একটি গন্ধহীন ফুল। রঙ্গন গাছে ফল ধরে। প্রজাপতি রঙিন ফুলের প্রতি আকৃষ্ট হয় কারণ এতে মধু থাকে।

মাটিতে থাকলে এ গাছের বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না কিন্তু টবে থাকলে সামান্য যত্নের প্রয়োজন হয়। জল ও তুলনামুলক অনেক কম লাগে। যারা ছাদ বাগান পছন্দ করেন তারা ছাদে দুই একটা রঙ্গন গাছের টব রাখতে পারেন। এতে ছাদের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পায়। এর চাষ পদ্ধতিও সহজ। ফুল ফোটা শেষ হয়ে গেলে রঙ্গন গাছ ছেটে দেওয়া ভালো, সেই প্রসঙ্গে জানতে সম্পূর্ন প্রতিবেদন পড়ুন।

গরমের ফুল গাছ হলুদ গন্ধরাজ:

গোল্ডেন গার্ডেনিয়া যা গোল্ডেন ম্যাজিক নামেও পরিচিত। এটি একটি গুল্ম জাতীয়, চিরহরিৎ, চকচকে গাঢ় সবুজ পাতা বিশিষ্ট উদ্ভিদ। ফুলগুলি তীব্র সুগন্ধ যুক্ত হয়। ফুলগুলি ফোটার সময় সাদা বর্ণের হয় এবং পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে ক্রিমি হলুদ এবং অবশেষে সোনালি হলুদ বর্নে পরিবর্তিত হয়। গাছগুলি উচ্চতায় ১০-১২ ফুট হতে দেখা যায়।

Gardenia jasminoides

গোল্ডেন গার্ডেনিয়ার (হলুদ গন্ধরাজ) বেড়ে ওঠার জন্য প্রচুর সূর্যালোক এবং সুনিষ্কাশিত মাটি প্রয়োজন হয়। হলুদ গন্ধরাজের প্রধান বৈশিষ্ট‍্য এর একটি ফুলের মধ্যে তিনটি রঙ পরিবর্তন লক্ষ‍্য করা যায়। এই গন্ধরাজ ফুল যখন সন্ধ‍্যায় ফোটার সেই সময় সাদা বর্ণের হয়, সকালে হলুদ ও বিকালে গেরুয়া বর্ণের রঙ ধারণ করে। সাদা গন্ধরাজ ফুল শুকিয়ে যাওয়ার পর ও এর সুগন্ধ থেকে যায় অনেকদিন। হলুদ গন্ধরাজ ও সাদা গন্ধরাজের মতো অত‍্যন্ত সুগন্ধযুক্ত, প্রচুর পরিমানে ফোটে তবে সাদা গন্ধরাজের মতো এই গন্ধরাজের কুঁড়ি ঝরে যাওয়ার কোন সমস‍্যা দেখা যায় না।

গরমের ফুল গাছ সূর্যমুখী:

সূর্যমুখী আমাদের সকলের পরিচিত এবং জনপ্রিয় এবং তেল শস্যগুলির মধ্যে অন্যতম। এটিকে আপনার বাগানে খুব সহজে সংযোজন করতে পারেন। সাধারণ সূর্যমুখী (Helianthus annuus) হল রুক্ষ রসালো, লোমশ কান্ড সহ একটি বার্ষিক উদ্ভিদ যা ১ থেকে ৪.৫ মিটার (৩ থেকে ১৫ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে , রুক্ষ পাতা যা ৭.৫থেকে ২৫ সেমি লম্বা হতে পারে।

Sunflower

সূর্যমুখী গাছ সাধারণত সব মাটিতেই চাষযোগ্য। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী। সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায়, তবে অগ্রহায়ন মাস থেকে চৈত্র, বৈশাখ পর্যন্ত এর চাষ করবার আদর্শ সময়।

গরমের ফুল গাছ মধুমালতী:

মধুমালতী, “Combretum indicum” নামেও পরিচিত, একটি সুন্দর এবং সুগন্ধি লতা যা বিশ্বের অনেক জায়গায় জনপ্রিয়। ফুলগুলি সাদা থেকে গোলাপী বা লাল বিভিন্ন রঙের আকৃতির হয়, এটি বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে বাড়ির প্রবেশ দ্বারে, ছাদে, ফুল বাগানে প্রভৃতি স্থানে অনেকে লাগিয়ে থাকে।

বাড়ির টবে মধুমালতি চাষ পদ্ধতি | Easy To Grow Madhumalti plant
Rangoon creeper

মধুমালতি গাছে সারা গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকাল ধরে প্রচুর ফুল পেতে, চারা গাছ রোপণের পূর্বে সঠিক জায়গা, পাত্র ও মাটি নির্বাচন করা উচিত। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সূর্যের আলো পায় তেমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। মাটিতে বসালে গ্রীষ্ম কালে গাছের গোড়ার মাটি সর্বদা ভেঁজা থাকে তেমন স্থান নির্বাচন করতে হবে।

গরমের ফুল গাছ জিনিয়া:

জিনিয়া বিভিন্ন রঙে আসে, যেমন-সাদা, হলুদ, লাল, বাদামি, বেগুণি, কমলা, সবুজসহ বিভিন্ন রঙে। মৌসুমী ফুলের মধ্যে এটি বেশ সুন্দর ও আকর্ষণীয় একটি ফুল। তবে এর কোন গন্ধ নেই। এটি শীতকালীন ফুল হলেও সারাবছর চাষ করা যায়। বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা হয়। জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাস এবং মার্চ থেকে এপ্রিল বীজ বপন করবার আদর্শ সময়। সুনিষ্কাশিত উর্বর দো-আঁশ মাটি জিনিয়া গাছের জন্য বেশি উপযোগী। স্যাঁতসেঁতে বা ভেঁজা মাটিতে এর উৎপাদন ভালো হয় না।

Zinnia

জিনিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Zinnia elegans। এটি  Asteraceae এর অন্তর্ভুক্ত।  এর আদি নিবাস মেক্সিকো, তবে বর্তমানে এই ফুল এখন সারা পৃথিবীতে চাষ করা হয়। বর্তমানে ২০ টির বেশি জিনিয়া প্রজাতির (Flower Variety) চিহ্নিত করা হয়েছে

গরমের ফুল গাছ গাঁদা:

শীতকালীন মরসুমি ফুলের মধ‍্যে অন্যতম জনপ্রিয় ফুল হল গাঁদা বা ইনকা, মেরিগোল্ড, জায়েন্ট আফ্রিকান মেরিগোল্ড, জায়েন্ট মেরিগোল্ড, আফ্রিকান মেরিগোল্ড নামে বিভিন্ন ভ্যারাইটির পাওয়া যায় ও তাদের পরিচিতও ওই নামে । এটি শীতকালীন ফুল হলেও গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে চাষ করা যায়। বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা হয়, তবে কাটিং থেকে এর বংশবিস্তার অধিক সহজ। জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাস এবং মার্চ থেকে এপ্রিল বীজ বপন করবার আদর্শ সময়। সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁয়াশ মাটি গাঁদা গাছের জন্য বেশি উপযোগী। স্যাঁতসেঁতে বা ভেঁজা মাটিতে এর চাষ ভালো হয় না।

Marigold

বাগানের শোভা বর্ধন করতে কিংবা ছাদ বাগানের শখ থাকলে অনায়াসে করতে পারেন গাঁদা ফুল চাষ। গাঁদা ফুল এবং গাঁদা পাতার অনেক উপকারিতা আছে। ক্ষত ও আঘাতে স্থানে গাঁদা গাছের পাতার রস অত্যন্ত কার্যকরী। গাঁদা ফুল সুগন্ধি তেল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

গরমের ফুল গাছ কসমস:

কসমস ফুলগুলি গোলাপী, বেগুনি এবং সাদা বিভিন্ন রঙের হয় এবং আপনার বাগানে প্রজাপতি এবং মৌমাছিকে আকর্ষণ করার জন্য দুর্দান্ত সংযোজন। কসমস গাছের জন্য উর্বর দোঁয়াশ যুক্ত ভাল-নিকাশী মাটি প্রয়োজন। দিনে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সূর্যের আলো পাই তেমন অর্ধ ছায়া যুক্ত স্থানে চারা গাছ প্রতিস্থাপন করতে হবে।

কসমস একটি বিদেশী ফুল, তবে বাগান সাজাতে বা বারান্দার সাজসজ্জা বাড়াতে কসমসের জুড়ি মেলা ভার। এটি মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় উদ্ভিদ। ৫-পাপড়িযুক্ত গোলাপী, সাদা, লাল এবং ক্রিমসন রঙের ফুল রয়েছে, যা বিভিন্ন শেডে আশে। লম্বা এবং পাতলা ডালপালা গুলিতে একাধিক ফুল জন্মে যা দেখতে খুব সুন্দর। বসন্তের শুরু থেকে শরৎ পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে ফুল ফোটে।

Cosmos

কসমস ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Cosmos bipinnatus. তবে কসমস বা মেক্সিকান অ্যাস্টারের রঙ, ফুলের ধরন এবং নামের উপর নির্ভর করে প্রায় ২০টি প্রজাতির কসমস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কসমস সালফিরিয়াস হল আমাদের পরিচিত উজ্জ্বল কমলা-হলুদ কসমস। Cosmos bipinnatus হল সাদা এবং গোলাপী কসমস।

গরমের ফুল গাছ ল্যান্টানা:

তাপ-সহনশীল এই ফুলগুলি লাল, হলুদ এবং কমলা প্রভৃতি রঙের দেখতে পাওয়া যায় যা আপনার গ্রীষ্মকালীন বাগানে নতুন অনুভূতি যোগ করার জন্য এটি দুর্দান্ত। ল্যান্টানা গাছটি বহুবর্ষজীবী এবং জল ছাড়াও মাটিতে দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। একটি নির্দিষ্ট ১০ থেকে ১২ ইঞ্চির পাত্রে কিছু বছর রেখে দিলে স্বাভাবিকভাবেই তা বনসাই উদ্ভিদে পরিণত হয়।

ল্যান্টানা ফুল বিভিন্ন রঙ এবং আকারে আসে। ল্যান্টানাস (ল্যান্টানা ক্যামারা) সহজে বেড়ে ওঠে এবং এর যত্ন নেওয়া সহজ। এই ভারবেনার মতো ফুলগুলি তাদের প্রস্ফুটিত সময়ের জন্য দীর্ঘকাল ধরে মূল্যবান। এগুলি যে কোনও বাগানে রঙের স্প্ল্যাশ যোগ করার জন্য উপযুক্ত এবং যত্ন নেওয়া সহজ।

Lantana

ল্যান্টানার বৈজ্ঞানিক নাম ল্যান্টানা ক্যামারা। এটি Verbenaceae পরিবারের অন্তর্গত। গুল্ম জাতীয় গাছ। ল্যান্টানা গাছগুলি সাধারণত ৬ থেকে ৮ মিটার লম্বা হয়। ল্যান্টানা ফুল বিভিন্ন রঙে আসে। এই ফুলগুলি শীতকালীন অঞ্চলে সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়।

গরমের ফুল গাছ গোলাপ:

গোলাপ তার সৌন্দর্য এবং সুবাসের জন্য সমস্ত দেশে প্রশংসিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সবসময়ই গোলাপের চাহিদা বেশি। আর তাই গোলাপ চাষের হার ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

Rose

গোলাপ চাষের জন্য উর্বর দোঁয়াশ মাটি যেমন অপরিহার্য, তেমনি এর যত্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই গোলাপ চাষের জন্য এঁটেল মাটি বেছে নেন। তবে যারা টবে সীমিত পরিসরে গোলাপ চাষ করেন তারা দোআঁশ মাটি ব্যবহার করতে না পারলেও এঁটেল মাটি ভাল ভাবে গুড়ো করে নিয়ে সাথে সার মিশিয়ে টবে লাগাতে পারেন। যারা টবে গোলাপ লাগান তাদের নিশ্চিত করা উচিত যে গাছগুলি পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এবং অতিরিক্ত জল যেন মাটিতে জমতে না পারে।

গরমের ফুল গাছ পর্তুলিকা:

পর্তুলিকা, মস রোজ, টাইম ফুল বা 9O Clock নামেও পরিচিত, এটি একটি প্রাণবন্ত এবং কম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সহজে বাগানে চাষ করা যায়। এর উৎজ্বল রঙ, কম রক্ষণাবেক্ষণ এবং রসালো পাতার সাথে, পোর্টুলাকা নবীন এবং অভিজ্ঞ উভয় উদ্যানপালকদের জন্য একটি জনপ্রিয় পছন্দ। ফুলগুলি সাদা,গোলাপী, হলুদ, লাল প্রভৃতি রঙের এবং আকৃতির হয়, এটি বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে বাড়ির প্রবেশ দ্বারে, ছাদে, ফুল বাগানে প্রভৃতি স্থানে অনেকে লাগিয়ে থাকে।

Portulaca

অনেকে মনে করেন এটি বন্য ফুল গাছ তাই এর যত্ন নেওয়ার দরকার নেই! এটা ভুল কথা। সঠিকভাবে যত্ন না নিলে ফুল আশানুরূপ পাওয়া যাবে না এবং এমনকি বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণের ফলে গাছ মারা যেতে পারে।

পোর্টুলাকা, মস রোজ গাছের জন্য সঠিক টব নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য লম্বা টব বেছে নেবেন না, গোল মাটির পাত্র বা প্লাস্টিকের পাত্র থাকলে বেছে নিন। পাত্রের নীচে ছিদ্র না থাকলে প্রথমে ছিদ্র করে নিতে হবে এবং তার উপরে একটি টব ভাঙার টুকরা বা খোরাম কুঁচি দিয়ে চারা গাছ রোপণ করতে হবে।

যাইহোক, যে কোনও উদ্ভিদের মতো পোর্টুলাকাতেও উন্নতির জন্য যথাযথ যত্ন প্রয়োজন।

গরমের ফুল গাছ দোপাটি:

দোঁপাটি ফুলের ইংরেজি নাম গার্ডেন বালসাম, ইমপেটিয়েন্স বালসামিনা প্রভৃতি, একটি একটি একবর্ষ জীবি উদ্ভিদ যার আদি নিবাস ভারত-বাংলাদেশ, মালয়শিয়া, চীনসহ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ জায়গায়। ফুলগুলি গোলাপী, বেগুনি, লাল এবং সাদা উৎজ্বল রঙের জন্য জনপ্রিয়। ফুলগুলি একটি স্বতন্ত্র আকৃতি হয় যা একটি গোলাপ বা ক্যামেলিয়ার স্মরণ করিয়ে দেয় এবং শীতের মাঝামাঝি থেকে শরৎকাল পর্যন্ত ফুল ফোটে।

Garden balsam

গার্ডেন বালসাম গাছগুলি বাড়তে তুলনামূলকভাবে সহজ, এবং তারা আংশিক ছায়া এবং আর্দ্র, ভাল-নিষ্কাশিত মাটি সহ একটি অবস্থান পছন্দ করে। বেলে-দোআঁশ মাটি এই গাছের জন্য একদম আদর্শ। বেলে-দোআঁশ মাটির সঙ্গে গোবর সার বা পাতা পচা সার, সরিষার খোল ইত্যাদি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করুন। মাটিকে একেবারে ঝুরঝুরে করে নিন। টবের মধ্যে জল দিয়ে অন্তত ছয় দিন রেখে দিন। তারপর মাটি হালকা করে শুঁকিয়ে মাঝে গর্ত করে চারা লাগিয়ে দিন। দশ দিন অন্তর অন্তর চারার চারপাশে গোবর সার দিন এবং মাসে অন্তত দুবার মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিন।

বাগানের দোঁপাটি উদ্ভিদের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এর স্ব-বীজ করার ক্ষমতা যা নতুন গাছ উৎপাদন করতে পারে। যারা কম রক্ষণাবেক্ষণের বাগান তৈরি করতে চান তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ। যাইহোক, বাগানের বিভিন্ন কীটপতঙ্গ এবং রোগের জন্য দোঁপাটি সংবেদনশীল, তাই গাছগুলি আক্রান্ত হলে তাদের প্রতিরোধ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

গরমের ফুল গাছ ম্যান্ডেভিলা:

ম্যান্ডেভিলা একটি জনপ্রিয় ফুল গাছ যা ভারতবর্ষ সহ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রতিবেশী দেশে দেখতে পাওয়া যায়। গাছের পাতাগুলো চকচকে গাঢ় সবুজ বর্ণের হয় এবং ফুলগুলি আকারের বেশ বড় হয় এবং দেখতে অনেকটা অলকানন্দা বা অ্যাল্লামান্ডার মতো হলেও এরা কখনই অলকানন্দা নয়। অলকানন্দা আর মান্ডেভিলা Apocynaceae একই পরিবারের গাছ, তাই ফুল ও গাছে অনেক মিল আছে ঠিক আবার অনেক পার্থক্যও আছে। ফুলগুলি সাদা, গোলাপী, লাল এবং হলুদ সহ বিভিন্ন রঙে আসে। ম্যান্ডেভিলা গাছগুলি সাধারণত আরোহণের দ্রাক্ষালতা হিসাবে উত্থিত হয়, যা বেড়া বা অন্যান্য আলম্বকে অবলম্বন করে সহজে বেড়ে উঠতে সক্ষম। তারা আংশিক ছায়া, মাঝারী সূর্যের আলো পছন্দ করে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে নিয়মিত জল এবং জৈব সারের প্রয়োজন হয়। ম্যান্ডেভিলা মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় উদ্ভিদ এবং প্রায়শই শীতল জলবায়ুতে বার্ষিক হিসাবে জন্মে।

Mandevilla

ম্যান্ডেভিলা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য যে কারোর নজর কাড়বে। লতানো গাছে যখন অনেক ফুল ফোটে তখন বাগানে আলাদা সৌন্দর্য আনে। ম্যান্ডেভিলা ফুলের আছে অনেক রং ও আকার আছে যা বসন্তের সময় থেকে টানা বর্ষাকাল প্রযন্ত বাগান আলোকিত করে রাখ। এই গাছের যত্ন বা পরিচর্যা ভিন্ন।

গোলাপী টগর (Kopsia fruticosa):

Kopsia fruticosa যা গোলাপী টগর নামেও পরিচিত একটি চিরহরিৎ, গুল্মজাতীয়, গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদ যা ভারতবর্ষ, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মায়ানমার, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডে দেখতে পাওয়া যায়। উদ্ভিদটি সাধারণত একটি গুল্ম বা ছোট গাছ হিসাবে বৃদ্ধি পায় এবং ১০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। কপসিয়া ফ্রুটিকোসা গাঢ় সবুজ, চকচকে পাতার মধ্য এবং ছোট, গন্ধহীন গোলাপী বর্ণের ফুল উৎপন্ন করে যা শীতকাল বাদে প্রায় সাড়া বছর ধরেই ফোটে। উদ্ভিদটি উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু পছন্দ করে এবং আংশিক ছায়া সহ পূর্ণ সূর্যের আলো পছন্দ করে।

Kopsia fruticosa

গরমের ফুল গাছ করবী:

করবী একটি অত্যন্ত শোভাময় এবং বহুবর্ষজীবী, গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। ওলেন্ডার ভূমধ্যসাগরীয় এবং এশিয়ার মহাদেশের বিভিন্ন্য অঞ্চলে গাছগুলি দেখতে পাওয়া যায়। সাদা, গোলাপী, লাল এবং হলুদ সহ বিভিন্ন রঙে ফুলগুলি হয়। এর হালকা সুবাস এবং উজ্জ্বল রঙের জন্য বেশি জন প্রিয়। উদ্ভিদের দীর্ঘ, সরু, গাঢ় সবুজ পাতা রয়েছে যা উষ্ণ আবহাওয়ায় চিরহরিৎ। ফুলগুলি সাধারণত শাখার শেষ প্রান্তে গুচ্ছ আকারে জন্মায় এবং গ্রীষ্ম থেকে শরৎকাল প্রযন্ত প্রস্ফুটিত হয়। ওলেন্ডার বা করবী খুব কষ্ট সহিষ্ণু উদ্ভিদ যা মাটির ধরন এবং অবস্থার একটি পরিসীমা সহ্য করতে পারে, তবে গাছটির সমস্ত অংশই বিষাক্ত, তাই শিশু বা পোষ্য প্রাণী থেকে গাছগুলিকে দূরে রাখা প্রয়োজন।

Oleander Flower

করবী গাছ প্রতিস্থাপনের জন্য উচ্চ জল নিকাশি যুক্ত উর্বর মাটি প্রস্তুত করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন বাগানের মাটি, নদীর বালি , জৈব সার, কোকোপিট এগুলিকে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।

গরমের ফুল গাছ ধুতরো:

ধুতরো, যা Moon Flower, Ghost Egg plant, Jimson Weed, Thorn Apple, Hindu Datura, Horn of Plenty, Downy Thorn Apple, Metel, Datura, Devil’s Trumpet নামেও পরিচিত। ধুতরো ফুলের অনেক প্রজাতি আছে, প্রথম প্রজাতির গাছগুলি তাদের বৃহৎ, ট্রাম্পেট আকৃতির ফুলের জন্য পরিচিত যার ফুলগুলি ডাল থেকে নিচে ঝুলে থাকে, এটি একটি ট্রাম্পেটের চেহারা দেয়। এই প্রজাতির ফুলগুলি গোলাপী, সাদা, হলুদ এবং কমলা সহ বিভিন্ন রঙে হয়, এটি দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় ফুলের উদ্ভিদের একটি অত্যাশ্চর্য বংশ। দ্বিতীয় প্রজাতির গাছগুলি তাদের বৃহৎ, ট্রাম্পেট আকৃতির ফুলের জন্য পরিচিত না হলেও ফুলগুলি ডাল থেকে নিচে ঝুলে থাকে না, সোজা হয়ে থাকে। এই প্রজাতির ফুলগুলি গোলাপী, সাদা এবং হলুদ বর্ণের সিঙ্গেল বা ডবল পেটালের হয়।

Brugmansia

ব্রুগম্যানসিয়া উদ্ভিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল তাদের বড়, ট্রাম্পেট আকৃতির ফুল। এই ফুলগুলি অত্যন্ত সুগন্ধযুক্ত, বিশেষত রাতে, এবং ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ব্রুগম্যানসিয়া গাছের ফুলগুলি ডাল থেকে ঝুলে থাকে, যা একটি ট্রাম্পেটের চেহারা দেয়, তাই সাধারণ নাম, অ্যাঞ্জেলের ট্রাম্পেট। এর বংশবিস্তার ডাল কাটিং এর মাধ্যমে করা হয়।

[আরও পড়ুন: গাছ ভর্তি প্রচুর ফুল পেতে নাগচম্পা গাছের যত্ন]

[আরও পড়ুন: ছাদ বাগানে সুগন্ধি দোলনচাঁপা ফুল গাছের পরিচর্যা প্রদ্ধতি]

নয়নতারা ফুল:

নয়নতারা ফুল গাছের পরিচর্যা খুবই সহজ, আমাদের দেশের আবহাওায় এই গাছে সারা বছর ফুল ফোটে। পাঁচ পাপড়ির বিশিষ্ট দেশি নয়নতারা গাছে তিন প্রকার রঙের (গোলাপী, সাদা, হালকা গোলাপী) ফুল ফোটে। নয়নতারা বীরুৎ জাতীয়, ভেষজ ফুল গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Catharanthus roseus। ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশে সর্বত্য নয়নতারা ফুল গাছ দেখতে পাওয়া যায়।

নয়নতারা ফুল গাছের পরিচর্যা

গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের যেকোনো মাটিতেই নয়নতারা (Vinca) গাছ প্রতিস্থাপন করা যায়, তবে দোঁয়াশ, বেলে-দোঁয়াশ মাটি নয়নতারা গাছের জন্য আদর্শ। গাছের গোড়ায় জল জমলে গাছ মারা যাবে। সুতরাং জল দাঁড়ায় না এমন উঁচু জায়গায় নয়নতারার চাষ করা উচিত।

FAQ [Frequently Asked Questions]

গ্রীষ্মকালে ছায়াময় স্থানে কোন গাছ করা যায়?

গ্রীষ্মের ছায়ায় রোপণের জন্য উল্লিখিত কয়েকটি উদ্ভিদ হল: Portulaca, Brugmansia, Primrose, Hellebore, Fuchsia, Astibe, Hydrangea ইত্যাদি।

গ্রীষ্মকালীন ফুলের গাছগুলিতে কত ঘন জল দেওয়া উচিত?

এটি উদ্ভিদ এবং আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে, তবে সাধারণভাবে, বেশিরভাগ গ্রীষ্মকালীন ফুলের গাছগুলিতে দিনে একবার জল দেওয়া প্রয়োজন।

গ্রীষ্মকালে টবে করা যায় এমন ফুল গাছ কি কি?

ক্রসান্ড্রা, জিনিয়াস, অ্যাডেনিয়াম, রোজ, পোর্টুলাকা এবং গাঁদা ধারক বাগান করার জন্য দুর্দান্ত বিকল্প।

গ্রীষ্মকালে কি ফুল ফোটে?

গ্রীষ্মকালে রোপণ করার জন্য আমাদের সেরা ফুলের তালিকা দেখুন, সেখানে ৩০টি গ্রীষ্মকালীন ফুল গাছের উল্লেখ করা হয়েছে
গ্রীষ্মকালীন ফুলের মধ্যে রয়েছে ক্রোসেন্ডা, এলামুন্ডা, অ্যাডেনিয়াম, অলকানন্দা, ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা, হিমচাপা, নীলঘন্টা, রঙ্গন, গন্ধরাজ, গোলাপী টগর (কপসিয়া ফ্রুটিকোসা), জারুল, হলুদ গন্ধ (গোল্ডেন গার্ডেনিয়া), কৃষ্ণচূড়া, জিনিয়া, করবি, সূর্যমুখী, গাঁদা, কসমস, গুলাচ, কামিনী, মাধবী লতা, মধু মালতী, কুন্দ, জুঁই ফুল, দোলনচাপা, নয়নতারা, দোপাটি, গোলাপ, বেলি প্রভৃতি।

আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *