গাছের শত্রু মিলিবাগের বংশ ধ্বংস | Easy Tricks To Control White Insects or Mealybug

Last updated on August 24th, 2023 at 09:25 pm

জবা গাছের প্রধান শত্রু মিলিবাগ (Mealybug) বা দয়ে পোকা। দয়ে পোকার (White Insects) আক্রমন মারাত্বক হলে গাছ মাড়াও যেতে পারে। আজকের এই প্রতিবেদন থেকে মিলিবাগ দমনের বিভিন্ন পদ্ধতি আমরা জানব।

গাছের শত্রু মিলিবাগের বংশ ধ্বংস | Easy Tricks To Control White Insects or Mealybug

জবা গাছের শাখার অগ্রভাগে বা পাতার নিচের অংশে অথবা পাতার বোটাতে সাদা পাউডার ঢাকা অংশ যখনই দেখতে পাবেন, তখন বুঝবেন যে জবার চরম শত্রু ইতিমধ্যেই গাছে এসে উপস্থিত। জবা গাছে পিঁপড়ের আনাগোনা শুরু হয়েছে মানে গাছে দয়ে পোকার বা মিলিবাগের আক্রমন ঘঠেছে। যখনই গাছে পিঁপড়ের আনাগোনা দেখতে পাবে তখন বুঝতে হবে যে হ্যাঁ আমার জবা গাছ এখন সংকটে, তাড়াতাড়ি এর কোন একটা ব্যবস্থা না নিলে চোখের সামনে গাছটা শেষ হয়ে যাবে।

যারা দির্ঘদিন ধরে জবা গাছের পরিচর্যা করে আসছেন তারা জানেন গরমের পড়ার কিছুদিন পর থেকেই গাছে এই ধরনের দয়ে পোকার আক্রমন ঘটে। কিন্তু যারা নতুন নতুন বাগান শুরু করেছেন তারা অত্যন্ত বিরক্তিকর অবস্থায় পড়েছে এই পোকা নিয়ে। সেটা আসলে জবা গাছে দয়ে পোকার আক্রমণ হওয়ার জন্য। ইংরেজিতে যাকে বলে মিলিবাগ। তবে সব গাছে একই প্রজাতির দয়ে পোকার আক্রমণ দেখা যায় না, বিভিন্ন গাছের বিভিন্ন প্রজাতির দয়ে পোকার আক্রমণ দেখা যায়। জবা গাছে যে প্রজাতির পোকার আক্রমণ দেখা যায় সেটি হল সেন্ট্রোকোকাস ইনসোলিটাস(Centrococcus insolitus)। শাখার আগার দিকে বা পাতার বোটাতে যে সাদা পাউডার ঢাকা অংশ দেখতে পাওয়া যায় ওই পাউডারের নিচে দয়ে পোকা কচি পাতা নরম ডাটা, কুড়ি ও ফুলের নরম বোঁটা থেকে রস চুষে খায়। ফলে কিছু দিনের মধ্যই ডগা ও পাতা কুঁকড়ে যায় বা বেঁকে যায় অর্থাৎ সর্বোপরি একটা বিকৃতি লক্ষ্য করা যায়। ফলে গাছে ফুলের পরিমাণ কমে যায়, ফুলের সাইজ ছোট হয়ে যায়, আবার কখনও কখনও ফুল ফোটা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এই পোকাটি মূলত শীতকালের শুরু থেকে বর্ষাকালের মাঝামাঝি পর্যন্ত আক্রমণ চালাতে থাকে। সুতরাং এই সময়ে যাতে পোকার আক্রমণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

গাছের শত্রু মিলিবাগের বংশ ধ্বংস | Easy Tricks To Control White Insects or Mealybug

[আরও পড়ুন: টবে জবা গাছ করবার সহজ কিছু টিপস্ | How To Grow Joba Flower Plant In Pots]

রাসায়নিক উপায়ে দয়ে পোকার দমন পদ্ধতি:

১| জবা গাছে নানা ধরনের পোকামাকড়ের পাশাপাশি মিলিবাগ এর আক্রমণ খুব হয়, তাই দেখা মাত্রই ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। ইমিডাক্লোরোপিড নামক মূল উপাদানের তৈরি কীটনাশক বাজারে পাওয়া যায়, ১ লিটার জলে পাঁচ ফোঁটা মিশিয়ে গাছে স্প্রে করবেন। মিলিবাগর আক্রমন হলে ৫ দিন অন্তর অন্তর মোট ৭ বার স্প্রে করতে হবে। এটি বাজারে মিডিয়া,কনসফিডার নামেও পাওয়া যায়। কনফিডার বাংলাদেশেও পাওয়া যায়।

2| যে কোন গাছে মিলিবাগ বা দয়ে পোকার (White insects/ Mealybug) আক্রমণ দেখা মাত্রই Bayer কোম্পানির এডমায়ার (Admire) ব্যাবহার করবেন, ২ গ্রাম এর প্যাকেট থেকে ৫ লিটার জল তৈরী করা যাবে। এটি ভারতবর্ষ ছাড়াও বাংলাদেশেও পাওয়া যায়।

৩| মিলিবাগ বা দয়ে পোকার (White insects/ Mealybug) জন্য তৃতীয় রাসায়নিক কীটনাশক রেনোভা(Renova), ৫ গ্রাম এর প্যাকেট থেকে ১০ লিটার জল তৈরী করা যাবে। এটি চার দিন অন্তর মোট ২ বার ব্যাবহারেই মিলিবাগ বা দয়ে পোকা শেষ হবে যাবে।

৪| কার্বোসালফান নামক মূল উপাদানের তৈরি এমন যে কোন কীটনাশক মিলিবাগ বা দয়ে পোকা দমনে ব্যাবহার করা যাবে, বাজারে যেটা মার্শাল নামে পাওয়া যায়। তবে এটি বাংলাদেশেও পাওয়া যেতে পারে। এই কীটনাশক প্রতি লিটার জলে ২ml দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে ৫ দিন অন্তর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

ঘরোয়া উপায়ে দয়ে পোকার দমন পদ্ধতি:

৫০০ গ্রাম নিম পাতার সাথে ৪ কোয়া রসুন তা ঝুড়ি ঝুড়ি কেটে নিতে হবে, এবার দেড় লিটার জলের মধ্যে নিম পাতা ও রসুন ডেলে তা টগবগ করে ফুটাতে হবে, ফুটানো হয়ে গেলে, ঠান্ডা করার জন্য রেখে দিতে হবে, ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই নিম পাতা ও রসুনের জল ছেঁকে নিয়ে জল গাছে স্প্রে করতে হবে। এভাবে তিন দিন পর পর গাছে স্প্রে করতে হবে, যে নিম পাতা, রসুন জ্বাল দেওয়া হল তা ফেলে দেবেন না, তা রোদে শুকিয়ে গুরো করে টবের মাটিতে ছিটিয়ে দিন, তা নীম খোলের কাজ করবে।

রাসায়নিক উপায়ে দয়ে পোকার দমন পদ্ধতি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে নিচে দেওয়া ভিডিও লিংকে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখে নেবেন। আগে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে গাছের মিলিবাগ দূর করবেন, তারপরে এই ঘরোয়া কীটনাশক তৈরী করে ব্যাবহার করবেন।

Channel এর ভিডিওগুলো যদি ভালো লেগে তাহলে অবশ্যই লাইক এবং শেয়ার করার অনুরোধ রইল। আর আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে “Creativity Gardening” ইউটিউব চ্যানেলকে সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ রইলো।

প্রিয় পাঠক, এই প্রতিবেদনটি পঠন করবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকের সহযোগিতা “ক্রিয়েটিভিটি গার্ডেনিং” সর্বদা কার্ম করে। গাছই আমাদের একমাত্র সম্পদ যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে পারে, বাঁচিয়ে রাখতে পারে। নিঃস্বার্থে গাছ ভালবাসুন, সকলকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করুন।

আপনাদের যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাকে জানাতে জানাবেন। সেগুলোর সমাধান করাবার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন, সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, সবাই খুব ভালো থেকো নমস্কার।?

4.7/5 - (4 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *