গাছে হলুদের ব্যবহার জানলে আপনিও অবাক হবেন

গাছে হলুদের ব্যাবহার : প্রাচীন কাল থেকে কাঁচা হলুদ থেকে শুরু করে গুঁড়া হলুদ অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে, নিত্য খাবার ব্যঞ্জনের রঙ করার উদ্দেশ্যেই হোক অথবা শারীরিক জটিল রোগ নিরাময়ে, প্রভৃতি ক্ষেত্রেই হলুদের গুরুত্ব অপরীসিম। হলুদ ব্যবহার করে শুধু শরীরের বহুমাত্রিক রোগ নিরাময় করা সম্ভব তেমনটি নয় এই হলুদ গাছের রোগ নিরাময়ে ও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছে হলুদ ব্যবহারের প্রচলন আজ থেকে নয় বহু যুগ আগে থেকে শুরু হয়েছে।

আজকের প্রতিবেদন থেকে আপনি গাছে হলুদের ব্যাবহার ব্যাবহার সম্পর্কে জানবেন। কি ভাবে হলুদ ব্যাবহার করবেন? কখন হলুদ ব্যাবহার করবেন? প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।

গাছে হলুদের ব্যবহার জানলে আপনিও অবাক হবেন

প্রত্যক বাগানীকে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। কখনও কাঁটা অংশে ছত্রাকের আক্রমন কখনও পিঁপড়ের অত্যাচারে গাছের শিকড় নষ্ট হয়ে যায়, আবার কখনও আঘাত লেগে ভেঙে যায় শখের গাছের ডালে ডাইব্যাক সমস্যা। কীটনাশক বা ক্ষতিকর রাসায়নিক ওষুধের বদলে হলুদের পেস্ট বা গুঁড়া ব্যবহার করতে পারলে নানা ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।

হলুদ গাছের আদি উৎস স্থান দক্ষিণ এশিয়া। হলুদ সাধারনত ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাল জন্মেয় । হলুদের কন্দ প্রতিস্থাপনের পরে গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রচুর মাত্রায় বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। এক বার হলুদের কন্দ প্রীতস্থাপন করলে বছরে পর বছরে আমরা তা থেকে হলুদ সংগ্রহ করতে পারি। ভারতবর্ষ, বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশ গুলিতে প্রচুর মাত্রায় এই হলুদের চাষ করা হয়ে থাকে।হলুদ আদা পরিবারের (Zingiberaceae) অন্তর্গত একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।

হলুদের মধ্যে আছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি- ৬, কারকিউমিন, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আন্টি-ফাংগিসাইড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ছত্রাকনাশক হিসেবে হলুদের ব্যাবহার:

ছত্রাকনাশক হিসেবে প্রথম ব্যবহার

আমরা যখন গাছের ডাল কাটাই-ছাটাই বা প্রুনিং করি তখন ডালের কাটা অংশে একটু হলুদ জলে গুলিয়ে কাটা অংশে লাগিয়ে দিলে ডাল ছত্রাকের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পায়।


প্রথমে কিছুটা পরিমাণ হলুদ একটি পাত্রের মধ্যে ঢেলে দিতে হবে এবং সেই হলুদের মধ্যে সামান্য পরিমাণ জল দিয়ে দিতে হবে। এবার কোন কিছুর দাড়া জল এবং হলুদ ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এইভাবে খুব সহজে আপনারা বাড়িতে হলুদের পেস্ট তৈরি করে নিতে পারবেন।

ছত্রাকনাশক হিসেবে দ্বিতীয় ব্যবহার

বর্ষাকালে অধিকাংশ গাছের পাতায় কালো বা বাদামি বর্ণের গোলাকার ক্ষত সৃষ্টি হয়, এগুলো ক্রমাগত বৃষ্টির জলের কারনে হতে পারে, বা বেশি পরিমানে গাছের গোড়ায় জল দেয়া ফলেও হতে পারে। এই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ প্রথম থেকে প্রতিহত না করা গেলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। গাছের পাতায় এই ধরনের ছত্রাক আক্রমণ দেখা দিলে আমরা হলুদ জল গাছের পাতায় স্প্রে করতে হবে।

১ লিটার জলে চা চামচের ১ চামচ হলুদ গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে চার থেকে পাঁচ দিন অন্তর অন্তর গাছে পাতায় ভালো করে স্প্রে করতে হবে।

ছত্রাকনাশক হিসেবে তৃতীয় ব্যবহার

ক্রমাগত টবের গোড়ায় বৃষ্টির জল জমলে বা টবে বেশি মাত্রায় জল দেওয়ার ফলে মাটি সবসময় স্যাঁতসেঁতে ভাব থেকে যায় এবং দীর্ঘদিন ধরে তা চলতে থাকলে গাছের গোড়া বা শেঁকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা তীব্র হয়ে ওঠে। মাটি স্যাঁতসেঁতে বা ভেজা ভাব থাকলে গাছের গোড়ায় কিছুটা পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবে তাহলে গাছের গোড়া বা শেকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

মাটি শোধন হিসেবে চতুর্থ ব্যবহার

গাছের মাটি তৈরী করার সময়ে, ৪ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে এক চামচ হলুদ গুড়া মাটির সাথে মিশিয়ে দেবেন। এটি ছত্রাক নাশক ও ক্ষতিকর ব্যকটিরিয়া থেকে গাছর শিকড়কে রক্ষা করবে।

পিঁপড়ের আক্রমণ রুখতে হলুদের ব্যাবহার

গাছের গোড়ায় পিঁপড়ার আনাগোনা রুখতে হলুদের গুঁড়া ছিটিয়ে দিতে হবে। গাছের গোড়ায় অথবা টবের উপর কয়েক চিমটি হলুদের গুঁড়া দিয়ে দিলে পিঁপড়া আক্রমণ বন্ধ হবে, এছাড়াও…..

টবের মাটিতে পোকার উপদ্রব কমাতে ১ লিটার জলে ১ চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিয়ে দিন। পোকার উপদ্রব কম হবে ।

ডাইব্যাক সমাধানে হলুদের ব্যাবহার

গোলাপ গাছের ডাল ছাঁটাই করবার পরে হয়ে ডাল কালচে যায় । এই সমস্যা দেখা দিলে আক্রান্ত কালচে অংশ কেটে হলুদের পেস্ট লাগিয়ে দিতে হবে।

রুটিং হরমোন হিসাবে হলুদের ব্যাবহার

গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার পূর্বে খানিকটা হলুদের পেস্ট লাগিয়ে দিলে রুটিং হরমোনের কাজ করবে ।

আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *