ড্রাগন ফল গাছের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি | Dragon Fruit Cactus Planting & Care

Last updated on November 17th, 2023 at 08:32 pm

ড্রাগন ফলের চাষ বানিজ্যিক ভাবে যেমন লাভজনক তেমন রয়েছে এই ফলের অনেক উপকারিতা। চিরাচরিত ও গতানুগতিক চাষ থেকে বেরিয়ে এসে যে সব কৃষক বন্ধুরা নতুন এবং বিকল্প চাষ শুরু করেছেন, তারাই লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে যেমন ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশের বিভিন্য স্থানে মিষ্টি আঙ্গুর ফলের চাষ হচ্ছে, আপেলের চাষ হচ্ছে, কমলা লেবুর চাষ হচ্ছে, কাল গমের চাষ হচ্ছে, আরো অনেক…

এই প্রতিবেদন থেকে ড্রাগন ফল গাছের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি | Dragon Fruit Cactus Planting & Care সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। ড্রাগন গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম Selenicereus undatus, এর ক্যাক্টাসেই (Cactaceae) পারিবারের অন্তর্গত, এটি দক্ষিণ মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার স্থানীয় ফল। ফলটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যারিবিয়ান, অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের সমস্ত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে চাষ করা হয়। ড্রাগন ফলটি ভিন্ন রঙের হয়।

ড্রাগন ফল গাছের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি | Dragon Fruit Cactus Planting & Care

Table of Contents

বিবরণ ও পরিচিতি:-

ক্যাকটেসি পরিবারের অন্তর্গত ড্রাগন ফলের উৎস দক্ষিণ মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকায়, এটি সেই দেশের জনপ্রিয় ফল। অন্যান্য ক্যাকটাস জাতীয় ফসলের মতো ড্রাগন গাছের উৎপত্তি মরু অঞ্চলে নয়, বরং এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত সমৃদ্ধ স্থানে। তাই গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গড় ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হয় ।

ড্রাগন ক্যাকটাস জাতীয় বহুবর্ষজীবী এবং চিরহরিৎ লতানো প্রকৃতির। এই গাছের কোন পাতা নেই, শুধুই রাপান্তরিত কান্ড। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারনত ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ফল বড় আকারে হয়, কিছু ফলের বাইরের অংশ লাল রঙের হয় আবার কিছু হলুদ রঙের হয়। পাকলে খোসার রং লাল হয়ে যায় বা গাঢ় হলুদ বর্নের হয়ে যায় , কিছু শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা রঙেও হয় এবং ফালগুলি রসালো প্রকৃতির। ফলের শাঁসের মধ্যে ছোট ছোট অসংখ্য কালো রঙের বীজ থাকে এবং সেগুলি নরম। এক একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। টেবিল ফল হিসাবেই শুধু নয়, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে এই ফল থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া জাত খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয় যার বানিজ্যিক চাহিদা প্রচুর। ড্রাগন ফল থেকে জ্যাম, আইসক্রিম, জেলি উৎপাদন, ফলের রস,ওয়াইন ইত্যাদি তৈরীতে ব্যাবহৃত হয়। একবার রোপণের পর অন্তত কুড়ি বছর ধরে এর ফল পাওয়া যায়। রোপণের দ্বিতীয় বছর থেকেই ফলন শুরু হলেও পাঁচ বছরের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়।

ড্রাগন ফল গাছের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি | Dragon Fruit Cactus Planting & Care
ড্রাগন ফলের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে এ ফলের চাষ শুরু হয়েছে, যা থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের বেশ কয়েকটি জাত আনা হয়।

ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশি ড্রগন গাছের চাষ করা হয় মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং রাজস্থানের কিছু এলাকায়। একই সময়ে, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলিতে প্রচুর সংখ্যক ড্রাগন ফলের চাষ করা হতো। তবে বর্তমানে ড্রাগন ফলের জনপ্রিয়তার কারনে সব স্থানেই এই ফলের চাষ করা হচ্ছে।

রোপনের জন্য স্থান নির্বাচন:-

সমতল ভূমির তুলনায় উঁচু স্থান বা পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের কাটিং রোপণ প্রদ্ধতির আদর্শ স্থান। যে স্থানে সহজে জল দাঁড়ায় না এমন উঁচু স্থান ড্রগন গাছের জন্য নির্বাচন করতে হবে এবং দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সূর্যের আলো পায় তেমন স্থান গাছ বেড়ে ওঠবার জন্য এবং ফল দেওয়ার জন্যে উত্তম। চারা রোপণের জন্য উপযোগী সময় হলো এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস।

[আরও পড়ুন: নীল অপরাজিতার পরিচর্যা | How to grow & care Blue Aparajita Flower Plant]

ড্রাগন ফল গাছের জন্য মাটি প্রস্তুত:-

উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়া যুক্ত গ্রীষ্মমন্ডলীয় স্থানে অম্ল বা ক্ষার মাটি ছাড়া প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফল (Dragon Fruit) চাষ করা হয়ে থাকে। তবে উচ্চ জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ এবং জলনিকাশের সুবিধাযুক্ত বেলে-দোআঁশ মাটি ড্রাগন ফল চাষের জন্য একদম আদর্শ। আপনি যদি আপনার জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করার কথা ভাবছেন, তাহলে বেলে- দোঁয়াশ মাটি সব থেকে আদর্শ। ভালো জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ এবং বেলে- দোঁয়াশ মাটি দ্বারা স্থান প্রস্তুত করে নিতে হবে। ১ x ১ মিটার x ১ মিটার আকারের গর্ত করে প্রথমে তা রোদে খোলা রাখতে হবে। গর্ত তৈরির ২০-২৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৩ থেকে ৫ কেজি পচা গোবর , ১০০ গ্রাম টিএসপি / ডিএপি, ১০০ গ্রাম এমওপি, ১০০ গ্রাম জিপসাম এবং ২৫ গ্রাম জিংক সালফেট সার দিয়ে গর্তের মাটির সাথে ভালো করে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দিতে হবে। প্রয়োজনে কিছু দিন অন্তর সেচ দিতে হবে। গর্ত ভরাটের ১৫ থেকে ২০ দিন পর প্রতি গর্তে ৪০ সেমি দূরত্বে ৪ টি করে ড্রগন চারা সোজাভাবে মাঝখানে লাগাতে হবে। চারা রোপণের ৩ মাস পর পর ১০০ গ্রাম করে ইউরিয়া প্রতি গর্তে প্রয়োগ করতে হবে ১ বছর পর্যন্ত।

ড্রাগন ফল গাছের সম্পূর্ণ চাষ পদ্ধতি | Dragon Fruit Cactus Planting & Care
ড্রাগন ফল গাছের রোপন পদ্ধতি

ড্রাগন গাছ নরম কাণ্ড বিশিষ্ট হওয়ায়, ৬-৭ ফুট উঁচু এবং ৫ ইঞ্চি চওড়া বিশিষ্ট সিমেন্টের চারকোণা পিলার অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে ।

ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা:-

নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করে নিয়মিত সেচ প্রদান এবং প্রয়োজনে চারপাশে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ লতানো এবং ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হওয়ায় সাপোর্টের জন্য ৪ টি চারার মাঝে ১টি সিমেন্টের ৪ মিটার লম্বা খুঁটি পুততে হবে, যেটি প্রথমেই বলেছি। চারা বড় হলে খড়ের বা নারিকেলের রশি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে নতুন কাণ্ড বার হলে খুঁটিকে আঁকড়ে ধরে গাছ সহজেই বাড়তে পারে। প্রতিটি খুঁটির মাথায় একটি করে সাইকেলের পুরাতন টায়ারের গেল রিং মোটা তারের সাহায্যে আটকিয়ে দিতে হবে। তারপর গাছের মাথা ও অন্যান্য ডগা টায়ারের ভেতর দিতে বাইরের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে। এর ফলে ঝুলন্ত ডগায় ফল বেশি ধরে।

ড্রাগন ফল গাছ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় , ১ বছরের একটি গাছ ৩০টি পর্যন্ত শাখা তৈরি করতে পারে। প্রাপ্ত গাছের ডাল ছাঁটাই করলে নতুন কান্ড গজাতে ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মূল কান্ড ও শাখা কান্ড রেখে পার্শ্ব ও মাটি অভিমুখী ডালগুলি ছেঁটে দিতে হবে। এবং ক্ষতিগ্রস্ত ও জড়িয়ে যাওয়া ডালগুলো কেটে ফেলতে হবে। রোপণের দ্বিতীয় বর্ষে প্রথম ছাঁটাই করতে হবে। ছাঁটাইয়ের পর অবশ্যই কাঁটা স্থানে যেকোনো ছত্রাকনাশক লাগিয়ে দিতে হবে।

[আরও পড়ুন: Bread Fruit কি: রুটি বা ভাতের বিকল্প হিসাবে রুটি ফল এর পুষ্টিগুণ ও বৈশিষ্ট্য 👇👇]

সারপ্রয়োগ:-

চারা গাছ প্রতিস্থাপনের ৩ থেকে ৪ মাস পরে প্রথম বছর ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও সুপার ফসফেট প্রয়োগ করতে হবে। দ্বিতীয় বছর থেকে ৫০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, ফসফেট এবং পটাশ সার + ২০ কেজি জৈব সার, তিনবার করে দ্বিতীয় ( পরের) বছর প্রতি স্তম্ভে প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে স্প্রে-এর মাধ্যমে অনুখাদ্য এবং PGR প্রয়োগ করতে হবে। ফসল তোলার ১০ দিন আগে সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাপনা:-

ড্রাগন ফল গাছ প্রচন্ড খরা এবং জলাবধ্যতা সহ্য করতে পারে না। তাই শুষ্ক মৌসুমে ১০-১৫ দিন পর পর গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে এবং বর্ষার মরসুম জল প্রয়োগ করবেন না, তাহলে কুঁড়ি ঝড়ে পড়বে এছাড়া ফলন্ত গাছে ৩ বার অর্থাৎ ফুল ফোটা অবস্থায় একবার, ফল প্রথম বার ধরা অবস্থায় একবার এবং ১৫ দিন পর আরেকবার জল দিতে হবে।

রোগ ও বালাই ব্যবস্থাপনা:-

ড্রাগন ফল গাছে তেমন রোগ পোঁকা- মাকড়ের আক্রমন খাটে না। তাবে কখনো কখনো এ গাছে মূলপঁচা, কান্ড ও গোড়া পঁচা রোগ দেখা যায়। এর জন্য বর্ষাকালে ৭দিন অন্তর অন্তর ব্যাকটেরিয়া নাশক এবং ছত্রাক নাশক একত্রে মিশিয়ে গাছে এবং গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও গাছের গোঁড়ায় যাতে জল না জমে সেই দিকে নিশ্চিৎ হতে হবে।

মূলপচা রোগ ও প্রতিকার:-

গোড়ায় অতিরিক্ত জল জমলে মূল পচে যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে মাটির ভেতরে গাছের মূল একটি দুটি করে পঁচতে পঁচতে গাছের সমস্ত মূল পচে যায়। গাছকে উপরের দিকে টান দিলে মূল ছাড়া শুধু কান্ড উঠে আসে। তবে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে উঁচু জমিতে ড্রাগন ফল গাছ চাষ করতে হবে। বর্ষাকালে ৭দিন অন্তর অন্তর ব্যাকটেরিয়া নাশক এবং ছত্রাকনাশক একত্রে মিশিয়ে গাছে এবং গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।

কান্ড ও গোড়া পচা রোগ ও প্রতিকার:-

ড্রাগন গাছের কান্ড সাধারণত ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়। এ রোগ হলে গাছের কান্ডে প্রথমে হলুদ রং এবং পরে কালো রং ধারণ করে এবং পরবর্তীতে ওই অংশে পচন শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে পচার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ রোগ দমনের জন্য যে কোন ছত্রাকনাশক (বেভিস্টিন, রিডোমিল, সাফ, থিওভিট ইত্যাদি) এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক ২+২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে সমস্ত কান্ডে প্রয়োগ করতে হবে।

ড্রাগন ফল সংগ্রহ :-

ড্রাগন ফলের কাটিং থেকে বা চারা গাছ রোপনের পর এক থেকে দেড় বছর বছরে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল যখন সবুজ থেকে সম্পূর্ণ লাল বা হলুদ রঙ ধারণ করবে তখন সংগ্রহ করতে হবে। গাছে ফুল ফোঁটার ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই ফল চয়নযোগ্য হয়ে যায়। সম্পূর্ণ রাপান্তরিত হতে ২ মাস সময় লাগে।

ড্রাগন ফলের প্রজাতির:-

ড্রাগন ফল সাধারণত তিন প্রজাতির হয়ে থাকে-

১) পিটাইয়া বা লাল ড্রাগন ফল এর বাইরের খোসার রঙ লাল ও ভেতরের শাঁস সাদা হয়। এই প্রজাতির ফলই বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
২) কোস্টারিকা ড্রাগন ফল এর বাইরের খোসা ও ভেতরের শাঁস উভয়ের লাল রঙের হয়।
৩) হলুদ রঙের ড্রাগন ফল। এই জাতের ড্রাগন ফলের বাইরের খোসা হলুদ রঙের হয় ও ভেতরের শাঁস সাদা রঙের হয়।

ড্রাগন গাছের বংশবিস্তার:-

বীজের মাধ্যমে অথবা অঙ্গজ পদ্ধতির মাধ্যমে ড্রাগন গাছের বংশবিস্তার করা হয়। তবে মাতৃ গুনাগুণ বজাই রাখার জন্য অঙ্গজ পদ্ধতি মাধ্যমে বংশবিস্তার করা উচিত, অর্থাৎ কাটিং প্রদ্ধতিরর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করাই ভালো। ড্রাগন গাছের কাটিং এর সফলতার হার প্রায় ৯৯ শতাংশ এবং তাড়াতাড়ি ফলও ধরে। কাটিং থেকে গাছ তৈরী হতে প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে, তারপরে গাছ ফল দেওয়ার উপযোগী হয়। সাধারণত বয়স্ক এবং শক্ত শাখার নিচের অংশ ৮ ইঞ্চি কেটে হালকা ছাঁয়াতে বেলে দোআঁশ মাটিতে অথবা বালিতে কাটা অংশে রুট হরমোন লাগিয়ে পুতে দিতে হয়। তারপর ২০ থেকে ৩০দিন পরে কাটিং এর গোড়া থেকে শিকড় বেরিয়ে আসবে। তখন এটা প্রতিস্থাপনের উপযুক্ত হবে।

[আরও পড়ুন: কিউই ফল গাছের প্রতিস্থাপন এবং সম্পূর্ন পরিচর্যা | How to grow & care kiwi fruit plant]

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ(NUTRITIONAL VALUE OF DRAGON FRUIT): –

ভিটামিন সি, ভিটামিন বি,ভিটামিন বি 2, ভিটামিন বি 3, পালিঅনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, লাইকোপেন, মিনারেল, ফাইবার এবং প্রচুর ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন ,ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে।

ড্রাগন ফলে প্রতি ১০০ গ্রামে যে উপাদান গুলো থাকে।
জল৮০-৯০ গ্রাম
শর্করা৯-১০ গ্রাম
প্রোটিন০.১৫-০.৫ গ্রাম
আঁশ (Dietary fiber)০.৩৩-০.৯০ গ্রাম
খাদ্যশক্তি৩৫-৫০ কিলোক্যালরি
চর্বি০.১০-০.৬ গ্রাম
ক্যালসিয়াম৬-১০ মি গ্রাম
আয়রন০.৩-০.৭ মি.গ্রাম
ফসফরাস১৬-৩৫ গ্রাম
ক্যারোটিনসামান্য
ভিটামিন- বি-৩০.২ – ০.৪ মি গ্রাম
Nutritional Value of Dragon Fruit

ড্রাগন ফলের গুরুত্ব (BENEFITS OF DRAGON FRUIT): –

Benefits Of Dragon Fruit | Dragon Fruit Cactus Planting & Care
Benefits Of Dragon Fruit

0 . জলের পরিমান বেশি থাকায় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
১. এই ফল ক্যারোটিন সমৃদ্ধ থাকায় চোখ ভালো রাখে।
২. আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় খাবার হজমে সহায়তা করে, এছাড়া আঁশ শরীরের চর্বি কমায়।
৩. এই ফলে বিদ্যমান প্রোটিন শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজে সহায়তা করে।
৪. এর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত ও দাঁত মজবুত রাখে।
৫. ভিটামিন বি-৩ এবং পালিয়ানস্যাচেচুরেটেড রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
৬. ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক , দাঁত ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।

[আরও পড়ুন: ছাদ বাগানে স্ট্রবেরি চাষ প্রদ্ধতি এবং রোগ-বালাই ও পরিচর্যা]

[আরও পড়ুন: টবে চেরি ফল গাছ যে ভাবে প্রতিস্থাপন এবং পরিচর্যা করবেন]


প্রিয় পাঠক, এই প্রতিবেদনটি পঠন করবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকের সহযোগিতা “ক্রিয়েটিভিটি গার্ডেনিং” সর্বদা কার্ম করে। গাছই আমাদের একমাত্র সম্পদ যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে পারে, বাঁচিয়ে রাখতে পারে। নিঃস্বার্থে গাছ ভালবাসুন, সকলকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করুন।

আপনাদের যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাকে জানাতে জানাবেন। সেগুলোর সমাধান করাবার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন, সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, সবাই খুব ভালো থেকো নমস্কার।


FAQ [Frequently Asked Questions]

ড্রাগন গাছের জন্য দিনে কত ঘন্টা সূর্যের আলা প্রয়োজন?

দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সূর্যের আলো পায় তেমন স্থান গাছ বেড়ে ওঠবার জন্য এবং ফল দেওয়ার জন্যে উত্তম। গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গড় ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হয় ।

ড্রাগন গাছের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় কখন?

চারা রোপণের জন্য উপযোগী সময় হলো এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস।

চারা বসানোর কত দিন পরে ড্রাগন ফল ধরে?

গাছ লাগানোর দেড় থেকে দুই বছরের মধ্য ফল পাওয়া যায়। গাছে ফুল ফোঁটার ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। বছরে পাঁচ থেকে ছয় বার পর্যায়ক্রমে ফল সংগ্রহ করা যায়।

ড্রাগন ফল কত বছর হয়?

চারা বসানোর দ্বিতীয় বছর থেকেই ফলন শুরু হলেও পাঁচ বছর পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়। একবার রোপণের পর অন্তত কুড়ি বছর ধরে পর্যায়ক্রমে এর ফল সংগ্রহ করা হয়।

ড্রাগন ফল কি টবে করা যায়?

হ্যা, বেলে দোঁয়াশ মাটি সহ প্রচুর সূর্যালোক পাই তেমন স্থানে গাছ রাখতে হবে তবে সরাসরি মাটিতে ড্রাগন ফল গাছ ভাল হয়। ড্রাগন গাছ টবে করবার জন্য গভীর এবং বড় মাপের পাত্র নির্বাচন করতে হবে।

ড্রাগন গাছে কখন ফুল আসে?

এপ্রিল-মে মাস থেকে গাছে ফুল আসতে শুরু করে, ফুল আসার ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে ফল তৈরী হয়। অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ফুল ও ফল ধরা অব্যাহত থাকে।

1.5/5 - (2 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *