গোলাপি টগর গাছের যত্ন

Last updated on October 24th, 2023 at 02:17 pm

টগর প্রজাতির ফুলের মধ্য গোলাপি টগর অন্যতম, এই প্রজাতির মধ্য কিছু আছে যা গুছকারে ফোঁটা আবার কিছু প্রজাতি আছে যেগুলি একক ভাবে ফোঁটে। টগর ফুল অনেক রঙের হয় যেমন- গোলাপি টগর, বেগুনি টগর, সাদা টগর প্রভৃতি। এই প্রতিবেদন থেকে আপনি পাঁচ-পাঁপড়ি বিশিষ্ট গোলাপি টগর গাছের প্রতিস্থাপন এবং পরিচর্যার বিবরণ জানতে পারবেন। অল্প স্থান এবং অল্প পরিচর্যাতে বাগানে সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠতে সক্ষম গোলাপী টগর, এই পাঁচ-বিশিষ্ট বেগুনি টগর ‘স্টার ফুল’ বা ‘তারা ফুল’ নামেও পরিচিত।

গোলাপি টগর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Kopsia fruticosa (কোপসিয়া ফ্রুটিকোসা), ইংরেজি নাম -Shrub Vinca, Pink Kopsia, Pink Gardenia প্রভৃতি, এটি Apocynaceae পরিবারের অন্তর্গত বহুবর্ষজীবি উদ্ভিদ। গোলাপি টগর গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এই গাছের আদি নিবাস কপসিয়া চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সহ অস্ট্রেলিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলে।

গোলাপি টগর গাছের যত্ন

গোলাপি টগর (গোলাপী কপসিয়া) বহুবর্ষজীবী, গুল্মজাতীয় চকচকে পাতা যুক্ত চিরহরিৎ উদ্ভিদ। গাছটি ৩ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হওয়ার সাথে সাথে ডালপালা ছড়িয়ে পড়ে। ফুলগুলি পাঁচ-পাঁপড়ি বিশিষ্ট হালকা গোলাপি বর্নের হয় এবং মাঝখানে গাঢ় লাল বর্নের হয়, ফুলগুলি দেখতে তারার ন্যায় । পাতাগুলি সরুভাবে উপবৃত্তাকার বা আয়তাকার এবং তরঙ্গায়িত পাতার মার্জিন এবং স্বতন্ত্র ড্রিপ ডগা ( 9 ইঞ্চি লম্বা, 3.5 ইঞ্চি চওড়া)। গাছের পাতা লম্বাটে আকৃতিরও হয়ে থাকে। শীতকাল ছাড়া প্রায় সারা বছর গাছে ফুল ফুটে , তবে গরমের শুরু থেকে শীতের আগে প্রযন্ত অধিক ফুল ফোঁটা ।

গোলাপি টগর গাছের যত্ন

গোলাপি টগর গাছের জন্য স্থান নির্বাচন:

গোলাপি টগর পূর্ন সূর্যালোক পছন্দ করে, তবে এটি আংশিক ছায়াময় স্থানে ভাল জন্মে। দিনে ৬ থেকে ৮ ঘটা সূর্যের আলো পাই তেমন স্থানে গাছ টিকে প্রতিস্থাপন করা উচিত। গাছ মাটিতে বা টবে প্রতিস্থাপন করবার প্রথম বছরেই ফুল আসে। গোলাপি টগর সুনিষ্কাশিত যে কোনো ধরনের মাটিতে বিস্তার লাভ করে, এটি সমতল অথবা ঢালু উভয় স্থানে চাষের উপযুক্ত।

গোলাপি টগর গাছের চাষ প্রদ্ধতি:

গোলাপি টগর বছরে প্রায় 10 সেন্টিমিটারে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। সুনিষ্কাশিত উর্বর মাটিতে চারাগাছ রোপণ করা উচিত যা সামান্য অম্লীয় থেকে নিরপেক্ষ (pH 6.5 – 7.5) এর মধ্য। এই প্রজাতির গাছগুলি অত্যন্ত অভিযোজনযোগ্য, খরা এবং জলাবদ্ধ উভয়ই সহ্য করতে সক্ষম। পূর্ণ সূর্যের আলোতে রাখলে মরসুমে প্রচুর ফুল পাওয়া যায়, এছাড়াও সারা বছর ধরেই কমবেশি ফুল ফোঁটে। পূর্ন ছায়া স্থানে রাখলে ফুলের পরিমান কমে যায়, গোলাপি টগর গাছের ডাল ছাঁটাই করবেন না, কারণ এটি ফুল ও সামগ্রিক বৃদ্ধি উভয়ই বাধা দেয়।

গরমের মরসুমে গাছে দুবেলা জল দেবেন। খেঁয়াল রাখবেন গাছের মাটি যেন শুঁকিয়ে না যায় কারন এই গাছ আর্দ্র মাটি পছন্দ করে, জলের অভাবের কারণে কুঁড়ি, ফুল এবং পাতা ঝড়ে যেতে পারে। বর্ষার সময়ে সেডের নীচে গাছ রাখবার প্রয়োজন নেই, এই গাছ খরা এবং জলাবদ্ধ উভয়ই সহ্য করতে সক্ষম, তিন চার দিন টবে জল জমে থাকলেও গাছ মাড়া যায় না।

টবে গাছ বসানোর পূর্বে সুনিষ্কাশিত উর্বর মাটি প্রস্তুত করতে, উর্বর দোঁয়াশ মাটির সাথে ভার্মি কম্পোস্ট বা এক বছরের পুরনো গোবর সার অথবা পাতাপচা সার ভালোভাবে মেশাতে হবে। সাথে প্রতি টবের হিসেবে হাঁফ মুঠো নিমখোল, হাঁফ মুঠো হাড়গুঁড়ো, হাঁফ মুঠো শিংকুঁচি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নিলে একেবারে আদর্শ মাটি তৈরি হয়ে যাবে।

বংশবিস্তার:

বীজ, কান্ডের কাটিং, কলম প্রদ্ধতির দ্বারা বংশবিস্তার করা সম্ভব।

প্রিয় পাঠক, এই প্রতিবেদনটি পঠন করবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকের সহযোগিতা “ক্রিয়েটিভিটি গার্ডেনিং” সর্বদা কার্ম করে। গাছই আমাদের একমাত্র সম্পদ যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে পারে, বাঁচিয়ে রাখতে পারে। নিঃস্বার্থে গাছ ভালবাসুন, সকলকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করুন।

আপনাদের যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাকে জানাতে জানাবেন। সেগুলোর সমাধান করাবার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন, সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, সবাই খুব ভালো থেকো নমস্কার।

আপনার মূল্যবান রেটিং দিয়ে উৎসাহিত করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *